প্রকাশিত: Sat, Mar 11, 2023 4:45 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 9:16 PM

ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের জনাকীর্ণ সমাবেশ

বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে শোষণ করে আওয়ামী লীগ করে উন্নয়ন: প্রধানমন্ত্রী

সালেহ্ বিপ্লব, আব্দুল্লাহ আল আমীন (ময়মনসিংহ): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে বলে মিথ্যাচার ছড়ানোর জন্য বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি শুনি, বিএনপির কোন এক নেতা আছে সারাদিন মাইক লাগিয়ে বসে থাকেন। বাংলাদেশটাকে নাকি আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। 

প্রধানমন্ত্রী তিনি ময়মনসিংহবাসীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, আজ ময়মনসিংহে এক যোগে ১০৩টি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন কি বাংলাদেশ ধ্বংসের নমুনা? এর আগে সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে তিনি ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন আরো ৩০ প্রকল্পের। সমাপ্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে  ৫৭০ কোটি টাকা। নতুন প্রকল্পগুলোতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্পকে স্বাধীনতার মাসে ময়মনসিংহবাসীর জন্য উপহার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহে একটি মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় এবং একটি প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় করা হবে বলে ঘোষণা দেন। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মিথ্যা বলাটাই তাদের পেশা। খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাত এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আর তার ছেলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। তারেক ও এবং কোকোর দুর্নীতি আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে বেরিয়েছে। এখন দেশ থেকে পালিয়ে আছে। আর আওয়ামী লীগ সরকারের করে দেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে দূরে বসে রাজনীতিও করে। 

সরকারের দেওয়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারা কিছুই করেন নাই বলে অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, আসলে লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি এটাই তাদের স্বভাব। লুটপাট, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি এবং বাংলাদেশকে পাঁচ পাঁচ বার দুর্নীতি চ্যাম্পিয়ন করা এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয় তারা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ায় আর বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা কমিয়ে ফেলে। সাক্ষরতার হার কমিয়ে ফেলে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার ১৬শ’ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট করেছিল। সক্ষরতার হারকে ৬৫ ভাগে উন্নীত করেছিল, যা পরবর্তী বিএনপি-জামাত সরকার না বাড়িয়ে উল্টো কমিয়ে ফেলে। আজকে সেখান থেকে বর্তমান সরকার দেশকে টেনে তুলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। সাক্ষরতার হারও ৭৫ দশমিক ২ ভাগে উন্নীত করেছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাসে চুরি ও দুর্নীতি এবং সাক্ষরতার হার কমানোর পেছনে বিএনপি নেতৃত্বের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ছিল ম্যাট্রিক পাশ, খালেদা জিয়া ম্যাট্রিক ফেল, আর তাদের ছেলে কয়েক স্কুল থেকে বহিস্কৃত হয়ে কোন এক অখ্যাত জায়গা থেকে একটি সার্টিফিকেট জোগাড় করেছে বলে শোনা যায়। কিন্তু কি পাশ করেছে তা কেউ বলতে পাওে না। তবে, বোমা মারা, গ্রেনেড হামলা, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, টাকা চুরি, দুর্নীতি, এতিমের অর্থ আত্মসাতে তারা সিদ্ধহস্ত। সেজন্য বাংলাদেশের মানুষ লেখাপড়া শিখে উন্নত হবে এটা তারা চায় না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করে। সেই দলতো কেবল সন্ত্রাস, লুটপাট, মানুষ হত্যা আর অত্যাচার-নির্যাতন করতে পারে। ওদের ক্ষমতায় থাকার মানেই হচ্ছে মানুষের ওপর নির্যাতন করা, শোষণ ও বঞ্চনা করা। আর আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক ও আবদুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল- আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং মির্জা আজম বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি এহতেশামুল আলম। সম্পাদনা: এল আর বাদল